উদ্বোধনের কয়েকদিন যেতে না যেতেই পর্যটক টানতে শুরু করেছে দিনাজপুরের নবাগঞ্জ জাতীয় উদ্যান। ঈদ উপলক্ষে আশপাশের জেলা উপজেলা থেকে প্রতিদিন হাজার খানেক দর্শনার্থীদের ভিড় জমছে এই উদ্যানটিতে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা বিশাল আয়তনের শালবনের নিরিবিলি পরিবেশ, নানা রকম পাখির ডাক মনোমুগ্ধ করে তুলেছে পর্যটকদের।
উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মিত শেখ ফজিলাতুন নেসা কাঠের সেতু আরো অকর্ষনীয় করে তুলেছে পর্যটকদের। সেই সাথে কর্মসংস্থান হয়েছে স্থানীয় শত-শত বেকার যুবকদের। অনেকে এই উদ্যানটিকে ঘিরে অনেকেই বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন।
এখানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা বলছেন, উদ্যানটিতে দর্শনার্থীদের জন্য নানা রকম সুযোগ সুবিধা বাড়ানো গেলে এখানে দর্শনার্থীদের সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পাবে সেই সাথে কর্মসংস্থান হবে স্থানীয়দের।
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে প্রায় ৬শ’ একর আয়তন নিয়ে অবস্থিত আসুরার বিল। এ বিলের রয়েছে ৮টি মুখ। নদীর মতো দেখতে এই বিলের পাশ দিয়ে রয়েছে ১৪শ’ একর আয়তনের বিশাল ঘন শালবন। ২০১০ সালে শালবনটিকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা হলেও অর্থ সংকটসহ নানা জটিলতায় মুখ থুবড়ে পরে উদ্যানের কাজ।
নবাবগঞ্জের এই জাতীয় উদ্যান ও আসুরার বিলকে ঘিরে পর্যটনের সম্ভাবনার মাথায় নিয়ে উদ্যানটির সংস্কার কাজ শুরু করে নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। বিলের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে তাতে শাপলা ও পদ্ম ফুলের গাছ লাগানো হয়। যা বর্ষা মওসুমে বিলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। বিলটিকে আরো দৃষ্টি নন্দন করেত এখানে ৯শ’ মিটার আয়তনের কাঠের আঁকাবাঁকা সেতু নির্মাণ করে উপজেলা প্রশাসন। সেতুটির নাম দেয়া হয় শেখ ফজিলাতুন নেসা সেতু। ঈদের দুইদিন আগে সেতুটি উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক। এটি খুলে দেয়া হয় দর্শনার্থীদের জন্য।
ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের পদচারণায় এখন মুখর নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যান। বিরামপুর থেকে ঘুরতে আসা শিউলি বেগম জানান, এখানকার মনোরম পরিবেশ তাদের মাঝে খুব সাড়া ফেলেছে। জহুরুল ইসলাম জানান, প্রচণ্ড রোদ হলেও এখানে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেয়া যাচ্ছে।
ফুলবাড়ি থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে উদ্যানে ঘুরতে আসা পারুল বেগম ও আফসার হোসেন বলেন, এখানে, চিড়িয়াখানা স্থাপন করা গেলে পশুপাখি দেখে শিশুরা আরো আনন্দ পেত। এখানে বসার চেয়ার, সৌচাগারসহ পর্যটকদের সুযোজ সুবিধা বাড়ানো গেলে উদ্যানটিতে দর্শনার্থীদের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে তারা মনে করেন।
এদিকে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, ইতোমধ্যে পর্যটকদের জন্য সৌচাগারসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মানের কাজ চলছে। তিনি জানান, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোসহ পর্যটকদের জন্য সুযোগ সুবিধা বাড়াতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই অঞ্চলের একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র স্বপ্নপূরীর একগুয়েমি থেকে বেড়িয়ে এসে নবাবগঞ্জের এই জাতীয় উদ্যান ও আসুরার বিল ভ্রমন পিপাসুদের বাড়তি আনন্দ দিবে বলে করেন এখানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা।
Leave a Reply